- August 13th, 2022
পঁচাশ চালিশা
সুমন চট্টোপাধ্যায়
বেদম রেগে গিয়ে রাজ্য সরকারি অফিসে কর্মরত আমার এক বন্ধু হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েছে — আমাদের অফিসে রোস্টার-ফোস্টারের কোনও বালাই নেই। সরকারি অর্ডার বলছে ৫০ শতাংশ হাজিরা, আসলে ১০০ শতাংশ।
পুরোনো সার্কুলার কপি-পেস্ট করে রাজ্য সরকার খুব সম্প্রতি আবার একটি আচরণ-নামা জারি করেছে যেখানে ৫০ শতাংশের ছড়াছড়ি।
বলতে গেলে পঁচাশ-চালিশা।
১) ইস্কুল-কলেজে ছেলেপিলেদের আসার কোনও দরকার নেই, তাতে অভ্যেস খারাপ হয়ে যাবে। চাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রশাসনের লোকজন আসতে পারেন, তবে ৫০ শতাংশ।
২) সব সরকারি অফিস ও পাবলিক আন্ডারটেকিংয়ে একসঙ্গে ৫০ শতাশের বেশি কর্মচারী থাকতে পারবেন না।
৩) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও একই সময়ে কর্মরত লোকের সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। তবে যত বেশি লোক ঘরে বসে কাজ করে, ততই ভালো।
৪) শপিং মল কিংবা বাজারে রাত ১০টা পর্যন্ত কোনও সময়েই ক্যাপাসিটির ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি লোক থাকবে না।
৫) রেস্তরাঁ এবং পানশালায় একসঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি লোক থাকবে না।
৬) সিনেমা বা থিয়েটার হলে দর্শকের সর্বাধিক সংখ্যা হবে ৫০ শতাংশ।
৭) সামাজিক, ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না।
৮) বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা হতে পারে সর্বাধিক ৫০।
৯) রাত দশটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলতে পারে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে।
১০) মেট্রো রেলেও তাই। আসন যত তার অর্ধেক যাত্রী উঠতে পারবেন কামরায়।
লোকাল ট্রেন চালু থাকলে কারও বাপের সাধ্যি নেই যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে। যে করতে যাবে সেই রাম ক্যালানি খাবে। মেট্রোর ব্যাপারে আমার জ্ঞানগম্যি কম। পাতালপুরীতে কী সম্ভব আর কী নয়, বলতে পারব না। নির্দেশিকার সার কথাটি হল, যাই করুন না কেন,রাত দশটার মধ্যে রাম রাম করে ফেলতে হবে। তারপর শুনশান রাতের কলকাতা চলে যাবে উউর্দিধারীদের হাতে।
আমি ভাবছিলাম বিশ বছর আগে অনুরূপ পরিস্থিতিতে এমন একটি সরকারি হুকুমনামা জারি থাকলে আমার কী অসুবিধেটাই না হত! তখন আমার পান-ধ্যানের সদভ্যাস ছিল। হাতের কাজ মোটামুটি গুছিয়ে ফেলে পানশালায় প্রবেশের সময় ছিল সাড়ে ন’টা থেকে পৌনে দশটার মধ্যে। কার্ফুটা কোনও সমস্যা হত না। কেন না প্রেসের গাড়ি। সমস্যা হত পনেরো মিনিটে পেগের কোটা শেষ করা। মানে জল খাওয়ার মতো ঢকঢক করে গিলতে হত! তারপরে যে কী হত…….
আমি পানাভ্যাস ছেড়েছি অনেক দিন। এই শহরটিও বদলে গিয়ে মদ্য-নগরীর চেহারা নিয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় মদের দোকান, তাদের সামনে লাইন। জাতে উঠেছে মদ, মাতালদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ যেমন ছিল তেমনি চলছে। নইলে কেউ রাত দশটা বাজলেই সুরালয়ের ঝাঁপ বন্ধ করে দেয়!

 
	 
							
 Arts and Literature
Arts and Literature Bioscope
Bioscope Columns
Columns Green Field
Green Field Health World
Health World Interviews
Interviews Investigation
Investigation Live Life King Size
Live Life King Size Man-Woman
Man-Woman Memoir
Memoir Mind Matters
Mind Matters News
News No Harm Knowing
No Harm Knowing Personal History
Personal History Real Simple
Real Simple Save to Live
Save to Live Suman Nama
Suman Nama Today in History
Today in History Translation
Translation Trivia
Trivia Who Why What How
Who Why What How


test comment